৩ মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক সঞ্চয়পত্র
সঞ্চয়পত্রের দাম ১০০,০০০ টাকা থেকে শুরু করে ১০,০০,০০০ টাকা পর্যন্ত , এটি কিনতে পারবেন সঞ্চয় ব্যুরো থেকে, বাংলাদেশের সকল তফসিল ব্যাংক হতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের শাখা হতে এছাড়া জিপিও ডাকঘর থেকে ।
সঞ্চয়পত্রের ক্রয় পদ্দতি : সর্বোচ্চ ১ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র সরাসরি নগদ অর্থ প্রদানের মাধ্যমে কিনতে পারবেন । তবে এক লাখ টাকার উপরে যদি আপনি সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ করতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে এমআইসি যুক্ত ব্যাংক চেক দিয়ে ক্রয় করতে হবে ।
মেয়াদ : এই সঞ্চয়পত্রের মেয়াদ ৩ বছর । চাইলে মেয়াদ শেষ হোওয়ার আগে টাকা তোলা যায় , তবে তা নিয়ম মেনে ।
সঞ্চয়পত্রের উৎসকর : এখানে ১ লাখ টাকার ওপর কিনলে উৎসকর দিতে হয় ১০% হারে ।
লাভের পরিমাণ :
মুনাফার হার মেয়াদ শেষে ১১.০৪%। বছর ভিত্তিক মুনাফার হার যথাক্রমে ১ম বছরে ১০.০০%, ২য় বছরে ১০.৫০%, ৩য় বছরে ১১.০৪% হারে মুনাফা এটি পাবে মেয়াদ শেষ হোওয়ার আগে ভাঙ্গলে ।
কারা কিনতে পারবে :
- বাংলাদেশের সকল শ্রেণী পেশার মানুষ কিনতে পারবেন, একজন সাধারণ নাগরিক থেকে শুরু করে সবাই ।
- অভিভাবক অর্থাৎ প্রাপ্ত বয়স্ক চাইলে নাবালক বা নাবালিকার নামেও কিনতে পারবেন ।
- চাইলে নাবালক ও নাবালিকা সরাসরি কিনতে পারবে
- মানসিক ভাবে উম্মাদ ব্যক্তির নামে চাইলে তার পক্ষ থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক যেকেউ কিনতে পারবে ।
- আপনার বৈধ আয় থাকলেই আপনি কিনতে পারবেন । একথা বলার কারণ এটায় যে সঞ্চয়পত্র কিনতে গেলে আপনাকে জিঙ্গাসা করতে পারে আপনার আয়ের উৎস কি ? আপনি আপনার আয়ের বৈধ পেপারস দেখাতে পারলে তারা সমস্যা করবে না ।
সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ সীমা :
- নতুন নিয়মে একজন সাধারণ গ্রাহক একক নামে (পরিবার সঞ্চয়পত্র, ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বাংলাদেশ ) সর্বোচ্চ ৫০ লাখ এবং যৌথ নামে ১ কোটি টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র কিনতে পারবেন না। আর ক্রেতা পেনশনার হলে একক নামে (পরিবার সঞ্চয়পত্র, ৩ মাস অন্তর মুনাফা ভিত্তিক সঞ্চয়পত্র ও বাংলাদেশ ) ১ কোটি এবং যৌথ নামে দেড় কোটি টাকা পর্যন্ত কিনতে পারবেন।
- যেকেউ একক নামে ৩০ লাখ ও যুগ্ম নামে ৬০ লাখ ইনভেস্টমেন্ট করতে পারবে ।
মুনাফার হিসাব :
মেয়াদ শেষে প্রতি লাখ টাকায় ৩৩,১২০ টাকা পাওয়া যাবে উৎসকর ব্যাতিত, আর ১ লক্ষ টাকায় প্রতি মাসে মুনাফা ১১.০৪% হারে টাকা ৯২০ মাত্র , তবে পর্যায়ক্রমে ৩ মাসের টাকা জমা হোওয়ার পর তা, তিন মাস পর পর তুলতে পারবে, আর তিন মাস পর পর পাবে ২৭৬০ টাকা । টাকা হতে উৎসকর কর্তন হবে অবশ্যই ।
উদাহরণ সরুপ যে পরিমাণ টাকায় ৩ মাস পর পর যে মুনাফা পাওয়া যাবে তা নিচে দেখুন :
১,০০,০০০.০০ টাকায় পাবে ২,৭৬০ টাকা মুনাফা
২,০০,০০০.০০ টাকায় পাবে ৫,৫২০ টাকা মুনাফা
৫,০০,০০০.০০ টাকায় পাবে ১৩,৮০০ টাকা মুনাফা
১০,০০,০০০.০০ টাকায় পাবে ২৭,৬০০ টাকা মুনাফা
বছর শেষে প্রতি লাখ টাকায় মুনাফার পরিমাণ :
১ম বৎসর চলাকালীন ১০,০০০ - গৃহীত মুনাফা
২য় বৎসর চলাকালীন ২১,০০০- গৃহীত মুনাফা
৩য় বৎসর চলাকালীন ৩৩,১২০- গৃহীত মুনাফা
সুবিধা :
- নমিনী নিয়োগ করা যায় ইচ্ছা করলে নমিনী চেন্জ করা যায় ।
- এক মেয়াদ শেষ হলে মূল টাকা স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনঃবিনিয়োগ হয়ে যাবে, মুনাফা বা সুদ ব্যতীত ।
- ক্রেতা মারা গেলে নমিনী চাইলে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে বা পরে টাকা তুলতে পারবেন ।
- চুরি হলে/হারিয়ে গেলে/ধ্বংস হলে/ নষ্ট হলে ডুপ্লিকেট/নকল সঞ্চয়পত্র ইস্যু/তোলা যাবে ।
সঞ্চয়পত্র এক স্থান হতে অন্য স্থানে স্থানান্তর করা যায়, ব্যাংক হতে ব্যাংকে, জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরো থেকে জাতীয় সঞ্চয় ব্যুরোতে ও ডাকঘর থেকে ডাকঘরে ।
- ক্রেতা বা নমিনী চাইলে মেয়াদ শেষ হোওয়ার আগে এটি ভাঙ্গাতে পারবেন ।
সঞ্চয়পত্র কেনার পেপার :
- ক্রেতার ও নমিনীর ২ কপি ছবি, জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্ম নিবন্ধন সনদ অথবা পাসপোর্টের ফটোকপি ।
সঞ্চয়পত্র করার ও ভাঙানোর নিয়ম : আপনি যেই ব্যাংক বা সঞ্চয় ব্যুরো থেকে কিংবা ডাকঘর থেকে সঞ্চয় পত্র কিনেছেন সেখান থেকে আপনি সঞ্চয়পত্র নগদায়ন করতে পারবেন ।
সঞ্চয়পত্রের মুনাফা তোলার নিয়ম :
নতুন নিয়মে, আপনি যেই অ্যাকাউন্টের চেক দিয়ে সঞ্চয়পত্র কিনেছিলেন মুনাফার টাকা আপনার ঐ ব্যাংক একাউন্টে চলে যাবে । চাইলে ব্যাংক একাউন্ট বদলানো যাবে, মুনাফার টাকা তোলার ক্ষেত্রে ।
আর ১ লাখ টাকার বেশি হলে ক্রেতাকে করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) দিতে হচ্ছে। এছাড়া সব ধরনের লেনদেন ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ বছর সঞ্চয়পত্রের উৎসকর ৫% থেকে বাড়িয়ে ১০% করা হয়েছে।